দেশে নিষিদ্ধ হচ্ছে ফ্রি ফায়ার ও পাবজি গেম
নিজস্ব প্রতিবেদন
বাংলাদেশ থেকে নিষিদ্ধ হছে চলছে জনপ্রিয় দুই গেম পাবজি ও ফ্রি ফায়ার। এর আগে পাবজি গেম কিছু দিনের জন্য বন্ধ হলেও পরে আবার চালু করা হয়।বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে সুপারিশ করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রালয় ও শিক্ষা মন্ত্রালয় থেকে এ সুপারিশ করা হয়। বিষয়টা নিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতেও আলোচনা হয়।সেখানে ওই দুই গেমের আসক্তি নিয়ে উদ্বেগ জানায়। সম্প্রিতি ফ্রি ফায়ার ও পাবজি গেম নিয়ন্ত্রনে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহনের আহব্বান জানান বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রালয় বলেছেন, ওই গেম তরুন ও কিশোর - কিশোরীদের মধ্যে হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হতে পারে।
তাই ধিরে ধিরে বিকল্প পদ্ধতিতে গেম দুটি বন্ধের জন্য উদ্যোগ গ্রহন করা হবে। যারা এ ধরনের গেম খেলে তারা ভিপিএন সহ নানা বিকল্প উপায়ে গেম দুটি খেলতে পারেন। আমরা সেসব বন্ধের পদক্ষেপ নেয়ার চেষ্টা করব বলে জানিয়েছেন। গেরিনা ফ্রি ফায়ার (ফ্রি ফায়ার ব্যাটলগ্রাউন্ড বা ফ্রী ফায়ার নামেও পরিচিত) একটি ব্যাটল রয়্যাল গেম ২০১৯ সালে এটি বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় ও সর্বাধিক ডাউনলোড করা মোবাইল গেম হয়ে উঠেছে। জনপ্রিয়তার কারনে, গেমটি ২০১৯ সালে গুগল প্লে স্টোর দ্বারা সেরা জনপ্রিয় ভোট গেম এর জন্য পুরুষকার পান। ২০২০ সালের মে পর্যন্ত ফ্রি ফায়ার বিশ্বব্যাপী দৈনিক ৮০ মিলিয়নেরও বেশি সক্রিয় ব্যবহারকারিদের সঙ্গে একটি রেকর্ড করেছেন। গেমটি অন্য খেলোয়াড়কে হত্যা করার জন্য অস্ত্র এবং সরঙ্গামের সন্ধানে একটি দ্বিপে প্যারাসুট থেকে পরে আসা ৫০ জন ও তার বেশি খেলোয়াড়কে অন্তর্ভুক্ত করে। অন্যদিকে নিউজিল্যান্ডে বন্দুক দিয়ে মসজিদে মুসলমানদের হত্যা এবং সেই দৃশ্য ফেসবুক লাইভ এর বিষয়টি অনেকেই পাবজির সঙ্গে তুলনা করেছেন। সম্প্রীতি নেপালে পাবজি নিষিদ্ধ করে নেপালের আদালত। একই কারনে ভারতের গুজরাটেও এ গেম খেলার উপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিলো। এমনকি এটি খেলার জন্য কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছিলো। অনলাইন গেম প্লেয়ার আননোনস ব্যাটলগ্রাউন্ড (পাবজি)। সমাজে এর প্রভাব ও কিশোর - কিশোরী - শিক্ষার্থীদের সহিংস করে তুলেছে এমন আশঙ্কা থেকেই খেলাটি বন্ধ করা উচিত বলে মনে করেন অনেকে। ২০১৮ সালে ক্যান্ডি ক্রাশ , টেম্পল রানের মতো জনপ্রিয় সব গেম কে পিছনে ফেলে অনলাইন গেম এর শীর্ষ তালিকায় জায়গা করে নেয় পাবজি।এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন , বর্তমান দেশে জনপ্রিয় তরুন প্রজন্মের মাঝে ফ্রি ফায়ার ও পাবজি গেম । দক্ষিন কোরিয়ার গেম ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান ব্লু হয়েল এর অনলাইন ভিডিও ২০১৭ সালে চালু হয়। এরপর থেকে এই গেমটি দ্রুত বাংলাদেশের তরুন প্রজন্মের কাছে অনেক প্রিয় হয়ে উঠে। অন্যদিকে চায়না প্রতিষ্ঠান ২০১৯ সালে তৈরি করা যুদ্ধ গেম ফ্রি ফায়ার ও একই ভাবে জনপ্রিয় হয় সবার কাছে । কিন্তু এই গেম দুটির ব্যাবহারের ফলে দিনে দিনে এর অপব্যাবহার এর মাত্রা বেড়েই চলছে। কিন্তু অন্যদিকে অনলাইন ভিত্তিক ক্লাস হওয়ার ফলে অভিভাবকরা তাদের ছেলে মেয়ের হাতে ল্যাপটপ, মোবাইল তুলে দিতে বাধ্য হচ্ছে। এ সুযোগের বেশির ভাগ অপব্যাবহার হচ্ছে। এমনকি তরুণ প্রজন্ম এই গেম দুটির প্রতি আসক্ত হয়ে পরছে। মহিউদ্দিন আহমেদ এই গেম দুটি নিয়ন্ত্রন এর জন্য সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন গত ২১ শে মে চাঁদপুরে মামুন (১৪) নামে এক তরুন মোবাইলের ডাটা কেনার টাকা না পেয়ে মায়ের সঙ্গে রাগ করে আত্মহত্যা করেন।
আমরা যখন আগামীর প্রজন্মকে সহজ ভাবে দ্রুতগতির ইন্টারনেট পাওয়ার জন্য কাজ করে যাইতেছি ঠিক তখন আগামী তরুন প্রজন্ম প্রযুক্তির অপব্যাবহার করে বিপদ্গামি হয়েছে। যা আমাদের ভাবিয়ে তুলছে। টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রালয় এবং নিয়ন্ত্রক কমিশনকে দ্রুত এবং দ্রুততার সহিত এই গেম গুলোর অপব্যাবহার বন্ধ এবং ভালো দিক তুলে ধরতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের পাশাপাশি জনসচেতনতা গড়তে পদক্ষেপ গ্রহনের আহ্বান জানিয়েছেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, এ ধরনের গেম খেলার ফলে অনেক অর্থ বিদেশ চলে যাইতেছে। অনলাইন গেম খেলার পাশাপাশি অর্থ লেনদেন হইতেছে এস এম এস প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে।
No comments